প্রশ্ন
বরাবর,
ইফতা বিভাগ,
আশরাফুল মাদারিস, সতীঘাটা, সদর, যশোর।
বিষয় : খারাজী ও উশরী ভূমি সংক্রান্ত মাসআলা জানার আবেদন।
মুহতারাম,
বাংলাদেশের জমি খারাজী নাকি উশরী বিস্তারিত দলিলসহ জানালে উপকৃত হতাম। বিশেষ করে খুলনা যশোর কুষ্টিয়া চুয়াডাঙ্গার জমি সম্পর্কে জানালে ভালো হয়।
বিনীত নিবেদক
মিজানুর রহমান
পীরকুল্লা, চুয়াডাঙ্গা
উত্তর
ফাতাওয়া নং- ৭৬৪
জমি খারাজী বা উশরী চেনার ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি হল, যে সকল জমি মুসলমানরা যুদ্ধের মাধ্যমে জয় করেছেন এবং তা মুজাহিদদের মাঝে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে, অথবা সেখানকার অধিবাসীরা স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে এবং ওই ভূমিতেই তাদেরকে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর এখনও পর্যন্ত ওই জমি কোনো কাফেরের হস্তগত হয়নি। তাহলে সেই ভূমি বা জমি উশরী। এ ধরনের ভূমির ওপর উশর ওয়াজিব।
সুতরাং যে ভূমি বর্তমানে মুলসমানদের হাতে আছে এবং তা মুসলমানদের মাধ্যমেই তার হাতে এসেছে এবং এখনও পর্যন্ত কোনো কাফেরের হস্তগত হয়নি, এসকল ভূমি উশরী। আর যদি মধ্যভাগে কোনো কাফেরের হাত বদল হয়ে আসে, তাহলে সেই ভূমি খারাজী। সেক্ষেত্রে খারাজ আদায়ের নিয়তে জমির ‘খাজনা’ বা ‘কর’ পরিশোধ করলে খারাজ আদায় হয়ে যাবে।
আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা না যায় যে, মধ্যখানে কোনো সময় কোনো কাফেরের হত বদল হয়েছে কি না। তবে বর্তমানে সেই জমিটা কোনো মুসলমানের মালিকানায় আছে, তাহলে সতর্কতামূলক ওই জমিকে উশরী-ই বলা হবে।
সুতরাং যারা উশরী ভূমিতে চাষাবাদ করে এবং তা থেকে উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ এক সা (সোয় তিন সের) বা এর চেয়ে বেশি হয়, তাদের ওপর উশর আদায় করা ওয়াজিব। আর উশর ওয়াজিব হওয়ার জন্য এক বছর পূর্ণ হওয়া বা নেসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়া শর্ত নয়। এমনকি প্রাপ্ত বয়স্ক ও বু্দ্ধিমান হওয়া কোনোটাই শর্ত নয়।
অতএব যে সকল ভূমি বৃষ্টির পানি, নদী বা ঝর্ণা ইত্যাদির পানি দ্বারা চাষাবাদ করা হয় এবং সেই ভূমিতে যান্ত্রিক সেচ উপকরণ ব্যবহার করে সেচ দেওয়া না হয়, সে ভূমির উশর ওয়াজিব হবে উৎপন্ন ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ। আর যে সকল ভূমি অর্থ খরচ ও যান্ত্রিক সেচ উপকরণ ব্যবহার করে চাষাবাদ করা হয়, সেখানে নিসফে উশর তথা বিশ ভাগের এক ভাগ ওয়াজিব হবে। -শরহুস সিয়ারিল কাবীর ৩/২৯৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২৮৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ৪/১৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩২৬, ৪/১৮৫; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ১৪/৩৪১
উত্তর লিখনে
ফাতাওয়া বিভাগ
আশরাফুল মাদারিস (সতীঘাটা মাদরাসা)
সতীঘাটা, সদর, যশোর, বাংলাদেশ