‘আশরাফুল মাদারিস’ পরিচিতি ও অবদান
যে জাতি যত বেশী শিক্ষিত সে জাতি তত বেশী উন্নত। শিক্ষাই মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে পরিচালিত করে। আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই তবে এই শিক্ষা অবশ্যই হতে হবে কুরআন—সুন্নাহ ভিত্তিক আদর্শ ইসলামী শিক্ষা। এ দর্শনের আলোকে মুসলমানদের বিশ্বাস ও শিক্ষা সংস্কৃতিকে কুরআন—সুন্নাহ ভিত্তিক পরিচালনার নিমিত্তে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ ‘দারুল উলুম দেওবন্দ’। উপমহাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কওমী মাদরাসাগুলো দারুল উলুম দেওবন্দেরই দুর্নিবার চেতনায় উজ্জীবিত খাঁটি দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানরূপে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের মাদরাসাও সে ধারার একটি।
প্রতিষ্ঠা
একবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে যশোর সদরের সতীঘাটা এলাকায় বিশিষ্ট দানবীর, মুখলিছ মরহুম আলহাজ¦ আব্দুস সুবহান (কালু মিয়া) সাহেবের ওয়াকফকৃত জমিতে সে এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের হাতে দ্বীনের একটি বীজ বপন করা হয়। খ্যাতিমান আলেমে দ্বীন মুফতী আলী আকবর রহ. এর সাহেবজাদা, কর্মমুখর ও সকলের আস্থাভাজন মাওলানা নাসীরুল্লাহ সাহেবের নিষ্ঠাপূর্ণ মেহনতে আল্লাহর মহিমায় তা আজ বিশাল ইলমী কাননরূপে বিস্তৃত ।
মাদরাসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
১. ইলমে দ্বীনের হেফাযত ও ব্যাপক প্রসারের মাধ্যমে আহকামে ইলাহী ও সুন্নাতে নববী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়মতান্ত্রিক তালীম ও তরবিয়তের মাধ্যমে হক্কানী আলেম তৈরী করতঃ তাদেরকে দেশ ও জাতির খেদমতের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।
২. আকায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ও ফিকহে হানাফীর সংরক্ষণ এবং দেওবন্দী সিলসিলায় তালীম—তরবিয়তের যথাযথ বাস্তবায়ন করা।
৩. ইসলাম বিদ্বেষী খোদাদ্রোহীদের মোকাবেলাপূর্বক সমাজ থেকে নাস্তিক্যবাদ ও শিরক—বিদআতের মূলোৎপাটনের মাধ্যমে সমাজে ন্যায়—নীতি প্রতিষ্ঠা ও সর্বস্তরে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার প্রবর্তন করা।
মাদরাসার শিক্ষাধারা
আশরাফুল মাদারিস গতানুগতিকতা পরিহার করে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে সাজিয়েছে তার পাঠদান পদ্ধতি। শিশুশ্রেণী থেকে শুরু করে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত শ্রেণীভিত্তিক পাঠের ব্যবস্থা রয়েছে। সুবিন্যস্ত সিলেবাসের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে মৌলিকভাবে কুরআন, হাদীস, ফিকহ, তাফসীর, উসূল, আকায়েদ, বৈষয়িক পর্যায়ে আরবীসাহিত্য, বাংলাসাহিত্য, ব্যাকরণ, নাহু, সরফ, বালাগাতসহ বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ভূগোল, দর্শন ইত্যাদি সমুদয় বিষয় প্রয়োজন পরিমাণ শিক্ষা দেওয়া হয়। শিক্ষার পাশাপাশি জনসমাজে ইসলামী শিক্ষার সুফল পৌঁছে দেওয়ার মহান লক্ষ্যে মাদরাসা বিভিন্ন সময় নানামুখী কর্মসূচী গ্রহণ করে থাকে। সব মিলিয়ে আশরাফুল মাদারিস একটি সমন্বিত মহাপ্রকল্প।
মাদরাসার শিক্ষাপ্রকল্প
১. প্রাইমারী মক্তব ও নাযেরা বিভাগ: এ বিভাগে সুযোগ্য উস্তাদগণের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে আবাসিক ব্যবস্থায় সমাজের কোমলমতি শিশুদের সহীহ—শুদ্ধভাবে কুরআন মাজীদ পড়ানো হয়। প্রাথমিক উর্দু, ফারসীসহ পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা, অংক, সমাজ ও ইংরেজী শিক্ষা প্রদান করা হয়।
২. হিফযুল কুরআন বিভাগ: এ বিভাগে একজন বিভাগীয় প্রধানসহ অভিজ্ঞ শিক্ষক মণ্ডলী দ্বারা অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিশুদেরকে সম্পূর্ণ কুরআন মাজীদ মুখস্থ করিয়ে ‘হাফেযে কুরআন’ বানানো হয়। এর পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জরুরী মাসাইলও শেখানো হয়।
৩. কিতাব বিভাগ: এটা মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় সর্বাধিক সমৃদ্ধ, বৃহত্তর ও প্রধান বিভাগ। এ বিভাগে ইবতিদাইয়্যাহ (প্রাথমিক), মুতাওয়াসসিতাহ (মাধ্যমিক), সানাবিয়া (উচ্চ মাধ্যমিক), ফযীলত (ডিগ্রী), তাকমীল (মাস্টার্স) মোট পাঁচটি স্তরে পূর্ণ ৯ বছরে মক্তব বা হিফয সমাপনকারী ছাত্রদেরকে ইসলামী শিক্ষাধারার দরসে নেযামীর পাঠ্যসূচী অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে কুরআন—হাদীস, ফিক্হ, তাফসীর, আকাইদ, আরবী সাহিত্য, নাহু—সরফ, বালাগাত—মানতেক, হেকমত—ফালসাফাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী করে যোগ্য আলেমরূপে গড়ে তোলা হয়। এ বিভাগে দশম শ্রেণী—মানের বাংলা, অংক, ইংরেজী এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় বিষয়াবলী শিক্ষা দেয়া হয়। তাছাড়া আরো আছে হিফযুল কুরআন ও হিফযুল হাদীসের একটি সুন্দর ব্যবস্থা। ইবতিদাইয়্যাহ থেকে শুরু করে জালালাইন জামাআত পর্যন্ত ছাত্ররা পর্যায়ক্রমে কুরআনুল কারীম থেকে নির্দিষ্ট অংশ ও হাদীসে রাসূল থেকে ৫০০ হাদীস মুখস্থ করে থাকে।
৪. ইফতা বিভাগ : কিতাব বিভাগের সর্বোচ্চ স্তর তাকমীল (মাস্টার্স) জামাআতের শিক্ষাসমাপনকারী ছাত্রদের জন্য আততাখাসসুস ফিলফিক্হি ওয়াল ইফতা তথা উচ্চতর ফিক্হ (ইসলামী আইন বিভাগ) গবেষণা বিভাগ। দাওরায়ে হাদীসের চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্ররা এ বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। তাদেরকে দুই বছরের অনুশীলনের মাধ্যমে যুগ সমস্যার সমাধানে সহীহ ফাতাওয়া প্রদানের যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলা হয়।
মাদরাসার সেবাপ্রকল্প
১. ফাতাওয়া ও ফারায়েয বিভাগ: মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের উদ্ভূত সমস্যাবলীর শরীয়তসম্মত সমাধান দেয়ার জন্য সুযোগ্য মুফতী সাহেবদের তত্ত্বাবধানে এ বিভাগটি পরিচালিত হয়। যারা বিভিন্ন বিষয়ের উপর মাসআলা—মাসাইল জানতে চান, তাদের জন্য মাদরাসার এ বিভাগ হতে মুফতী সাহেবদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর লিখিতভাবে ফাতাওয়া প্রদান করা হয়।
২. প্রকাশনা বিভাগ: দ্বীনের বহুবিধ খেদমত আঞ্জাম দেয়ার লক্ষ্যে মাদরাসা কতৃর্পক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচী প্রণয়ন করে তা ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। এর একটি দিক হলো ‘দারুত তাসনীফ’ তথা প্রকাশনা বিভাগ। এ বিভাগ হতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বই—পুস্তক, আরবী ও বাংলা পত্রিকা যথাক্রমে ত্রৈমাসিক ‘আততারহীব’ ও ‘আলইরশাদ’ প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
৩. দাওয়াত ও তাবলীগ: সাধারণ মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত ও তাদেরকে দ্বীন শেখানো এবং নিজের আমলী যিন্দেগী গড়ার লক্ষ্যে ছাত্ররা বিরতিতে সময় লাগানোর জন্য বের হয়। প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত মাদরাসা মসজিদে গাশত, বাহির মহল্লায় গাশত ও ২৪ ঘণ্টা তাবলীগী কর্মসূচী পালন করা হয়।
৪. মজলিসে দাওয়াতুল হক: হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক রহ. প্রতিষ্ঠিত মজলিসে দাওয়াতুল হকের কর্মসূচী বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছাত্রদেরকে সুন্নতে নববী পালনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং বিদআত ও কুসংস্কারের মুলোৎপাটনে সহীহ কুরআন—সুন্নাহর প্রচার—প্রসার করা হয়।
৫. ইসলাহী মজলিস: আল্লামা ইবরাহীম আফ্রীকী দা. বা., আল্লামা আবুল কাসেম নোমানী দা. বা. ও অন্যান্য উলামায়ে কেরামের পরামর্শ ও দিকনির্দেনায় সর্বসাধারণের আত্মশুদ্ধি ও তাযকিয়ায়ে নফসের উদ্দেশ্যে সাপ্তাহিক, মাসিক ও ত্রৈমাসিক ইসলাহী মজলিসের ব্যবস্থা করা হয়। সাপ্তাহিক ইসলাহী মজলিস প্রতি শুক্রবার আসর থেকে ঈশা পর্যন্ত, মাসিক ইসলাহী মজলিস শুক্রবার আসর থেকে শনিবার ইশরাক পর্যন্ত আর ত্রৈমাসিক ইসলাহী মজলিস বৃহস্পতিবার আসর থেকে শনিবার ইশরাক পর্যন্ত হয়ে থাকে।
৬. দুস্থ মানবতার সেবা: মাদরাসার স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র—শিক্ষকগণ লেখাপড়ার পাশাপাশি আর্তমানবতার সেবায় সদা তৎপর। মাদরাসার পার্শ্ববর্তী এলাকার গরীব—দুস্থ ও দুর্যোগকালীন সময়ে দেশের মানুষের সেবায় তারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. ব্লাড ব্যাংক সেবা: মাদরাসার ছাত্রদেরকে প্রতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে রক্ত পরীক্ষা করতঃ গ্রুপ নির্ণয় করে তালিকাভূক্ত করে রাখা হয় এবং প্রয়োজনে ইমার্জেন্সি ফ্রি ব্লাড সরবরাহ করা হয়। আলহামদুলিল্লাহ, এক্ষেত্রে অত্র অঞ্চলে মাদরাসার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।
ছাত্র প্রশিক্ষণ কর্মসূচী
ক. ছাত্র পাঠাগার: মাদরাসার শিক্ষাক্রমে নির্ধারিত কিতাবসমূহ অধ্যয়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যাতে বহুমুখী জ্ঞান লাভ করতে পারে, সে উদ্দেশ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্ঞান—বিজ্ঞান সম্বলিত বই—পুস্তক ও পত্র—পত্রিকা সমৃদ্ধ একটি ছাত্র পাঠাগার রয়েছে। এখান থেকে ছাত্ররা প্রয়োজনে বই—পুস্তক সংগ্রহ করে অধ্যয়ন করতে পারে।
খ. মুহাযারা: কুরআন—হাদীসের জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি ছাত্রদের মাঝে দ্বীনী চেতনা জাগ্রত করা এবং যে কোনো একটি বিষয়ের উপর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ ও গভীর জ্ঞান অর্জনের এক বিশেষ আয়োজন—মুহাযারা। এটি প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার মাগরিবের পরে ইফতা বিভাগের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেখানে উস্তাদগণ নির্ধারিত বিষয়ের উপরে দীর্ঘ আলোচনা পেশ করেন এবং শেষে প্রশ্নপর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
গ. বক্তৃতা প্রশিক্ষণ মজলিস: কুরআন ও হাদীসের জ্ঞানার্জনের পর সর্বসাধারণের মাঝে দ্বীনী দাওয়াতের ব্যাপক প্রসারের যোগ্যতা অর্জন ও ছাত্রদের বাকশক্তি প্রস্ফুটিত করার লক্ষ্যে মাদরাসায় সাপ্তাহিক বক্তৃতা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে ইবতিদাইয়্যাহ থেকে মিশকাত পর্যন্ত প্রত্যেক শ্রেণীর প্রত্যেক ছাত্রকে বক্তৃতা দিতে হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সমাপন করে লোক সমাজে যে কোনো বিষয় সুন্দর সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যক্ত করতে পারে।
ঘ. তাহফীযুল কুরআন: সাধারণত কিতাব বিভাগের হাফেয ছাত্ররা দরসী কিতাবাদি অধ্যয়নরত অবস্থায় হিফযুল কুরআনের প্রতি তেমন মনোযোগ দিতে পারে না। আবার অনেকে অলসতার দরুন হিফযুল কুরআনের মত মহাদৌলত হারাতে বসে। তাদের এই হিফযুল কুরআন সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে আরবী মাসের তারিখ অনুপাতে প্রতিদিন এক পারা তেলাওয়াত এবং খুছূছী থেকে নাহবেমীর পর্যন্ত ছাত্রদের জন্য প্রত্যেক বৃহস্পতিবার কমপক্ষে ২ পারা দাওর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যহ আসর নামাযের পরে তেলাওয়াতের পারা থেকে পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া প্রতি বছর অত্র মাদরাসা থেকে শত শত হাফেয ছাত্রদেরকে বিভিন্ন অঞ্চলে রমাযানে তারাবী নামায পড়ানোর উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।
ঙ. আস সুবহান দেয়ালিকা: দেশের পাশ্চাত্যমুখী বিকৃতরুচির কলম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ইসলামী সাহিত্যের নির্মল জ্যোতি বিকিরণের মহান লক্ষ্য নিয়ে ছাত্রদেরকে যোগ্য লেখকরূপে গড়ে তোলার জন্য ‘আস সুবহান’ বাংলা দেয়ালিকা প্রকাশ করা হয়।
চ. আলইরশাদ বাংলা পত্রিকা: স্বাচ্ছন্দে বাংলা লিখতে পারার অনুভূতি প্রাণবন্ত করা ও মাতৃভাষার দক্ষ কলমসৈনিক তৈরি করার লক্ষ্যে প্রকাশনা বিভাগ ‘দারুত তাসনীফ’ কতৃর্ক প্রকাশিত ত্রৈমাসিক ইসলামী বাংলা পত্রিকা।
ছ. আত তারহীব আরবী পত্রিকা: আরবী ভাষা সাহিত্যে পূর্ণ পাণ্ডিত্য ও দক্ষতা অর্জনে মাদরাসার প্রসংশনীয় আয়োজন, প্রতিযোগিতামূলক ত্রৈমাসিক আরবী পত্রিকা ‘আত তারহীব’। যেখানে প্রাথমিক আরবী বিভাগের ছাত্র থেকে উচ্চতর বিভাগ পর্যন্ত প্রত্যেকেই আগ্রহভরে অংশগ্রহণ করে থাকে।
জ. খুদ্দামুত্ত্বলাবা: সিলেবাসভূক্ত ধারাবাহিক শিক্ষাক্রমের পাশাপাশি ছাত্রদের মেধা বিকাশ ও বহুমুখী অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে ১৪৪০ হি./২০১৯ ঈ. সালে মাদরাসার আসাতিযায়ে কেরামের পরামর্শক্রমে বাছাইকৃত ছাত্রদের সমন্বয়ে ‘খুদ্দামুত্ত্বলাবা’ নামে একটি নতুন কাফেলা গঠন করা হয়। কাফেলাটি দশটি বিভাগে বিভক্ত। বিভাগগুলো হল—ছাত্র আঞ্জুমান, মাকতাবা, দাওয়াত ও তাবলীগ, সৌন্দর্যায়ন, সাফাই, বিদ্যুত—জেনারেটর, মেহমানদারি, সামানা হেফাযত, পানি ব্যবস্থা ও চিকিৎসা বিভাগ।
মাদরাসার শিক্ষা—সফলতা
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করার ফলে অতি অল্পসময়ে এ প্রতিষ্ঠানটির সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় এ প্রতিষ্ঠানটি উলামায়ে কেরাম ও সুধী মহলের নিকট ব্যাপকভাবে সমাদৃত। অপরদিকে সুদক্ষ শিক্ষকমণ্ডলীর আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ‘বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের’ অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষাসমূহে বিভিন্ন মারহালায় (স্তরে) মেধা তালিকায় শীর্ষ ও সম্মানজনক স্থান অধিকার করে ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করে আসছে।
শেষকথা
মনোরম আবাসিক পরিবেশে মুরব্বীগণের দুআয় অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় পরিচালিত এ মাদরাসা সাবলীল গতিতে এগিয়ে চলছে তার অভীষ্ট লক্ষ্যপানে। দেশ, জাতি ও দ্বীনের কল্যাণে আশরাফুল মাদারিসের কার্যক্রম হোক আরও গতিময় ও সাফল্যমণ্ডিত। আমীন।