প্রশ্ন
বরাবর,
ইফতা বিভাগ,
আশরাফুল মাদারিস, সতীঘাটা, সদর, যশোর।
বিষয় : উশর সংক্রান্ত মাসআলা জানার আবেদন।
মুহতারাম,
আমি একজন চাষী, দীর্ঘ দিন যাবৎ ধান, পাটসহ বিভিন্ন চাষাবাদ করে আসছি এবং উৎপাদিত ফসলের মধ্যে ধানের উশর (সেচ হলে ২০ ভাগের এক ভাগ এবং আকাশের পানি দিয়ে উৎপাদিত হলে ১০ ভাগের এক ভাগ) যথাযথ আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্ব গতিতে এবং জমির মালিককে নির্ধারিত ফসল দিয়ে উৎপাদিত ফসলের মূল্য থেকে খরচ প্রায় দেড় গুণ যা প্রায় বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হয়।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
(১) উপরোক্ত বিষয়ের প্রতি খেয়াল রেখে যদি সমস্ত উৎপাদিত ফসল বিক্রিও করে দেই তবুও ঘাটতি থেকে যায়। সেক্ষেত্রে ধানের উশর আদায় করা লাগবে কি না?
(২) কোন কোন ফসলের উশর আদায় করতে হবে? এবং তার পরিমাণ কতটুকু? কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জানালে উপকৃত হব।
বিনীত নিবেদক
সাইফুল ইসলাম
নিত্যানন্দকাঠি, গদখালি,
ঝিকরগাছা, যশোর।
উত্তর
ফতওয়া নং ৭৭৫
(১) যে সকল উশরী জমি বৃষ্টির পানি, নদী ও ঝর্ণা ইত্যাদির পানি দ্বারা চাষাবাদ করা হয় সে জমির উৎপাদিত ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ আর যান্ত্রিক সেচ উপকরণ ব্যবহার করে চাষাবাদ করা হলে বিশ ভাগের এক ভাগ উশর আদায় করা ওয়াজিব। এক্ষেত্রে চাষাবাদের খরচাদি উৎপাদিত ফসলের মূল্যের চেয়ে বেশি হলেও তা ধর্তব্য হবে না। সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত সুরতে চাষাবাদের খরচ উৎপাদিত ফসলের চেয়ে বেশি হলেও আপনাকে উশর আদায় করতে হবে।
(২) শুধু ঘাস, খড়, গাছের ডালপালা, আগাছা, বন্য গাছ ও কঞ্চি জাতীয় কিছু গাছ যা আগাছা বলে গণ্য, এগুলো ছাড়া উশরী জমিতে উৎপাদিত সকল প্রকার ফসল ও ফলের উশর আদায় করতে হবে। তবে ঘাস, খড় ইত্যাদিও যদি ইচ্ছাপূর্বক চাষ করা হয় তাহলে তারও উশর আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে উৎপাদনের পদ্ধতি তথা সেচ হলে বিশ ভাগের এক ভাগ আর আকাশের পানি হলে দশ ভাগের এক ভাগ উশর প্রদান করতে হবে।
আর উশরী ভূমিতে উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ এক সা (সাড়ে তিন সের) বা এর চেয়ে বেশি হলে সেই ফল ও ফসলের উশর আদায় করা ওয়াজিব। -মাবসুত, সারাখসী ২/১৮৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৮-৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২৭১; তাতারখানিয়া ৫/২৭৪-২৭৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩২৮; রদ্দুল মুহতার ২/৪৯,৩২৮
উত্তর লিখনে
ফাতাওয়া বিভাগ
আশরাফুল মাদারিস (সতীঘাটা মাদরাসা)
সতীঘাটা, সদর, যশোর, বাংলাদেশ